ইসলামী শারিয়া মতে গান-বাজনা-নাচ অগ্রহণযোগ্য। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে খুবই কট্টোর বিধান রয়েছে। পর্দা ও শালীনতা রক্ষা করার দায় নারীদের উপর বিশেষভাবে আরোপিত। তাই মুসলিম সামাজিক মূল্যবোধকে বিদ্ধ করে এমন আচরণ পরিবারের নারী সদস্যকে পরিবারের অন্য সদস্যরা 'অনার কিলিং' করে থাকে। এটা পুরো মুসলিম দেশের সব সমাজেই প্রচলিত। ইরাকে নারীদের পোষাকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলেই শারিয়া পুলিশ বিনাবিচারে হত্যা করে থাকে। এর প্রতিবাদে রাজপথের আন্দোলন থামাতে গণহত্যা চালাতে দ্বিধা করে না ইরান সরকার।
ইরানের বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা দারিউশ মেহেরজুই এবং তার স্ত্রী ওয়াহিদে মোহাম্মদীফাকে হত্যা করা হয়। গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাতে তেহরানের পশ্চিমে কারাজ নামক অঞ্চলে পরিচালকের নিজ বাড়িতে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগে নার্গেস মোহাম্মদীকে বর্তমানে ইরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে তাকে বেশ কয়েক-দফা কারাদণ্ড দেয়া হয়। ইরানের নারী অধিকার কর্মী নার্গেস মোহাম্মদী এ বছর নোবেল শান্তি পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। নোবেল কমিটি জানিয়েছে, ইরানে নারীদের উপর যে নিপীড়ন চালানো হচ্ছে তার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নার্গেস মোহাম্মদীকে শান্তি পুরষ্কার দেয়া হয়েছে। তিনি ইরানে মানবাধিকার রক্ষা এবং সবার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইরাকের ধর্মীয় সরকারের বিরুদ্ধে নিপীড়নের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তাই এই হত্যাকাণ্ডকে রাষ্ট্রের টার্গেট কিলিং বলা যায়। যদিও এই হত্যা দায় অন্য একজন টিকটকারের উপর দেয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমগুলো কী বলছে এই হত্যাকণ্ড নিয়ে। দেখা যাক:
গত শুক্রবার ইরাকের রাজধানী বাগদাদের পূর্ব জায়েন এলাকায় বিকেলে জনপ্রিয় টিকটক তারকা ওম ফাহাদকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নারী টিকটকারের নাম ওম ফাহাদ। আসল নাম গুফরান সাওয়াদি। তিনি জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকে পপ মিউজিকের সঙ্গে নিচের নাচের ভিডিও শেয়ার করতেন। টিকটকে তার হাজার হাজার অনুসারী রয়েছে। সূত্র বিবিসি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাওয়াদি বাইরে যাওয়ার জন্য তার গাড়িতে চড়ে বসেছিলেন। এ সময় খাবার ডেলিভারির বেশধারী মোটরবাইকে আসা এক ব্যক্তি গাড়ির ভেতরে বসা সাওয়াদিকে গুলি করে। হামলায় সাওয়াদির সঙ্গে থাকা আরেক নারী আহত হয়েছেন।
একটি ইরাকি নিরাপত্তা সূত্র বলছে, ওম ফাহাদ খ্যাত সাওয়াদির ভিডিওর হাজার হাজার ভক্ত থাকলেও অনেকেই আবার তার ক্রিয়াকলাপে ক্ষুব্ধ ছিলেন। গত বছর বাগদাদের এক আদালত ভিডিওর নামে ‘পোশাকে অশ্লীলতা’র অভিযোগ আনার অপরাধে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিল।
অন্যদিকে, ওম ফাহাদের সঙ্গে দেশটির আরেক টিকটক তারকা ডালিয়া নাঈমের মধ্যে সম্প্রতি স্নায়ু দ্বন্দ্ব বেড়েছিল। ডালিয়া প্লাস্টিক সার্জারির কারণে ‘ইরাকি বার্বি’ নামে পরিচিত। ডালিয়াও দেশটিতে ব্যাপক জনপ্রিয় ও অপরাধ জগতের সঙ্গেও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
অনেকে মনে করছেন ডালিয়ার ভাড়াটে খুনিও খুন করতে পারেন ওম ফাহাদকে। পুলিশ বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কিন্তু খুনিকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি।