ইরানের হামলা থেকে ইসরায়েলকে বাঁচাতে বেশ কয়েকটি দেশ সহায়তা করে। এদের মধ্যে জর্ডান মুসলিম বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হচ্ছে। দেশটিকে বেঈমান হিসেবে উল্লেখ করছে খোদ জর্ডানিরা। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে আরও চমকপ্রদ তথ্য। যা মুসলিশ বিশ্বের জন্য বেশ দুঃখজনক।
জানা গেছে, গত শনিবারের হামলায় ইরান ৩০০-এর বেশি ড্রোন, ক্ষেপনাস্ত্র ছোড়ে। এর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক একটি অংশ ইসরায়েলে পৌঁছার আগেই জর্ডানের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে। এটিকে ফিলিস্তিনের শহীদদের সঙ্গে প্রতারণা হিসেবে বর্ণনা করলেন মুসলমানরা।
কিন্তু জর্ডানের এ সফলতা বা ইসরায়েলকে রক্ষার পেছনে বেশি কলকাঠি নেড়েছে সৌদি আরব।
অথচ দেশটি মুসলমানদের কাছে তীর্থস্থানের মর্যাদা পেয়ে আসছে। অপরদিকে মুসলমানরা ইসরায়েলকে চরম শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বরাতে দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশ কয়েকটি উপসাগরীয় রাষ্ট্র, যার মধ্যে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ইরানের ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছিল। তাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ-ই ছিল বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাফল্যের চাবিকাঠি। যা প্রায় সম্পূর্ণভাবে ব্যাপক আক্রমণকে ব্যর্থ করে দিয়েছিল।
এ তথ্যের সত্যতা হিসেবে সৌদি, মার্কিন ও মিসরীয় কর্মকর্তাদের বরাত দেওয়া হয়েছে।
এই সহযোগিতার নেতৃত্বে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি ইরানের হুমকি মোকাবিলায় একটি অনানুষ্ঠানিক সামরিক অংশীদারত্ব গঠনের জন্য বছরের পর বছর চেষ্টা করে আসছে। এরই সুফল ভোগ করেছে ইসরায়েল।
ইরানের হামলা ঠেকাতে জর্ডান সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। তার আকাশসীমার মাধ্যমে ইসরায়েলের দিকে যাওয়া ড্রোনগুলোকে ভূপাতিত করে।
প্রতিবেদনে কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, এত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার সাফল্যের পেছনে আছে আরব দেশগুলোর তথ্য পাচার। তারা ইরানের পরিকল্পনা সম্পর্কে ইসরায়েল ও পশ্চিমা বিশ্বকে গোয়েন্দা তথ্য প্রদানের পাশাপাশি তাদের আকাশসীমার ব্যবহার এবং রাডার ট্র্যাকিং প্রদানের সযোগ দেয়।
কিছু ক্ষেত্রে সৌদি আরবের সামরিক বাহিনী সরাসরি সহায়তা করে। তার মানে ইসরায়েলকে সহায়তাকারী একমাত্র আরব জাতি জর্ডান ছিল না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পুরো প্রক্রিয়ায় সৌদি আরব মুখ্য ভূমিকা পালন করে। অন্যান্য আরব দেশ চুপ থেকে অংশ নেয়।
প্রাথমিকভাবে কিছু আরব দেশের সরকার দ্বিধান্বিত ছিল। তারা ভয় পাচ্ছিল। যদি ইসরায়েলকে সাহায্য করে তবে ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয় কি না। প্রতিশোধের সম্মুখীন হতে হবে কি না। এ ছাড়া গাজা উপত্যকায় হামাসের উপস্থিতিও তাদের ভাবাচ্ছিল।
এর মধ্যেই সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত তথ্য সরবরাহে রাজি হয়। জর্ডান তাদের আকাশসীমা ব্যবহারের পাশাপাশি নিজেদের যুদ্ধবিমান সহায়তা দেয়।