বায়তুস সুজুদ ছাড়াও বায়তুল মা’মুর, বায়তুল মাহফুজ, বায়তুল হামদ্ মসজিদের মাইক ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা। পরে লোক জড়ো করে, মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে মেট্রোরেলের স্টেশনে হামলা চালায়।
১৯ জুলাই রাতে এশার নামাজের পর রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরের বায়তুস সুজুদ মসজিদে ঢুকে পড়ে কয়েকজন।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে পুলিশের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করতে, মসজিদের মাইক ব্যবহার হয় মিরপুরে। স্থানীয়রা দাবি করছে, অন্তত চারটি মসজিদে ঘোষণা দিয়ে লোক জড়ো করে মেট্রোরেলের স্টেশনে হামলা হয়। এর মধ্যে একটি মসজিদের ১৯ জুলাইয়ের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ বলছে, সেদিন রাজধানীজুড়ে শতাধিক মসজিদের মাইক ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা।
১৯ জুলাই রাতে এশার নামাজের পর রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরের বায়তুস সুজুদ মসজিদে ঢুকে পড়েন কয়েকজন। মসজিদ কর্তৃপক্ষের ওপর জোর খাটিয়ে মাইক ব্যবহার করে তাঁরা। পুলিশের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে, এলাকাবাসীকে মাঠে নামার আহ্বান জানান তাঁরা।
বায়তুস সুজুদ ছাড়াও বায়তুল মা’মুর, বায়তুল মাহফুজ, বায়তুল হামদ্ মসজিদের মাইক ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা। পরে লোক জড়ো করে, মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে মেট্রোরেলের স্টেশনে হামলা চালায়।
স্থানীয় একজনের ভাষ্য, মাইকে বলা হয় আপনারা যে যেখানে আছেন আন্দোলনে নেমে পড়েন। এর পরপরই সকলে দলে দলে নেমে যায়। তবে কিছুক্ষণ পরই দেখা যায়, সকলে মিলে মেট্রোরেল স্টেশন ভাংচুর করছে।
মসজিদের মাইক ব্যবহার হয় আজান, জুমার খুতবা, মৃত্যুর খবর আর জনহিতকর কাজে। কিন্তু গুজব ছড়িয়ে সহিংসতায় ব্যবহার করায়, সমালোচনা চলছে এলাকায়।
বায়তুল হামদ্ জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন বলেন, ‘আমি তাদের ( সন্ত্রাসীদের) বলেছি, এ কাজে আমরা রাজি নই। এটি ন্যায়সঙ্গত নয়। এরপরও তারা আমাকে জোর করে মাইকিংয়ে বাধ্য করে।’
বায়তুল মা’মুর মসজিদের ইমাম বলেন, ‘আমাদের ধারণা, যারা জোরপূর্বক হামলার জন্য মসজিদের মাইক ব্যবহার করেছেন তাদের অধিকাংশই জামায়াত-শিবির আর জঙ্গি দলের সদস্য।’
পুলিশ বলছে, শুধু মিরপুর নয় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক মসজিদ থেকে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে মানুষকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করেছে সন্ত্রাসীরা। পরে তারা পুলিশের ওপর হামলা ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় তাণ্ডব চালায়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, প্রতিটি এলাকাতেই সন্ত্রাসীরা মসজিদ, মসজিদের মাইক ব্যবহারের চেষ্টা করেছে। মসজিদের মাইক ব্যবহার করে তারা সাধারণ মানুষ জড়ো করে পুলিশের ওপর হামলা ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় তাণ্ডব চালায়।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এক পর্যায়ে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বহু হতাহত হন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, দেশব্যাপী সহিংসতায় ১৪৭ জন নিহত হয়েছেন। আর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি, দেশজুড়ে সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ২৬৬।
সরকারের দাবি, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা ছদ্মবেশে প্রবেশ করে সহিংসতা উসকে দেয়। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভি, বনানীর সেতুভবন, মহাখালির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, মেট্রোরেল স্টেশনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায়।
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত ১৯ জুলাই রাত থেকে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। মাঠে নামানো হয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের। সহিংসতার ঘটনায় শুধু রাজধানীতে ২২৯টি মামলা করা হয়েছে। আর এতে রোববার পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ হাজার ৭৬৪ জনকে।
Thanks
উত্তরমুছুন